সফলতাই মানুষকে কোনো কিছুর প্রতি আকৃষ্ট করে। মানুষ সফলদের সাথে থাকতে চায়। মানুষ সাফল্য চায়। দুনিয়াবি সাফল্যের সম্ভাবনা দেখিয়ে অনেক সময় রাসূলুল্লাহ (স) মানুষকে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করেছেন। মক্কা আর তায়েফ বিজয়ের পরপরই আরবরা দলেদলে ইসলাম গ্রহণ করতে শুরু করেছিলো।
ইসলামি ব্যাংকিং সিস্টেমের আর্থিক সাফল্যের কারণেই অনেক কনভেনশনাল ব্যাংকিং সিস্টেম নিজেদের ব্যাংকের শরীয়াহ উইং খুলতে বাধ্য হয়েছে। ব্যবসায়িক লাভের চিন্তাতেই সানসিল্ক নিয়ে এসেছিলো হিজাব রিফ্রেশ শ্যাম্পু। হালাল মার্কেটিং দুনিয়াবি সাফল্য এবং লাভ দেখিয়েই মডেস্ট প্রোডাক্ট ও মোরাল সার্ভিসের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করেছে।

ইসলাম অবশ্যই নিরেট ও নিখাঁদ ঈমান প্রত্যাশা করে মুসলিমদের প্রতি। কিন্তু একই সাথে ইসলামের যে ব্যাপক সভ্যতা কেন্দ্রিক ইহজাগতিক রূপ বিদ্যমান—তা-ও মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে ইসলামি সভ্যতার বিনির্মানে কাজ করার ক্ষেত্রে। যদি জাগতিক নিরাপত্তা ও যাপিত জীবনের বিকাশ নিশ্চিত করা যায়—তবে একজন অমুসলিমও ইসলামি সভ্যতার জিম্মায় থাকতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করবে।
মানুষ দুটো ব্যাপার থেকে কাজ করার জন্য অনুপ্রেরণা বা মোটিভেশন পায়: ১. শাস্তির ভয় এবং ২. পুরস্কারের লোভ
আল্লাহর রাসূল দুটোই করেছেন। তিনি জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে যেমন সতর্ক করেছেন, তেমনি দিয়েছেন জান্নাতের সুসংবাদ। রাসূলুল্লাহ (স) হুনায়েনের যুদ্ধলব্ধ গনিমতের মাল মক্কার সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী নও-মুসলিমদের মাঝে বিতরণ করেছিলেন, যাতে তারা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট থাকে। অথচ আনসার সাহাবীরা শুধুমাত্র রাসূলুল্লাহর প্রতি ভালোবাসা আর ঈমানের স্বাদ নিয়েই সন্তুষ্ট থেকেছিলেন।
ইসলামি শরিয়ত প্রকৃতিগতভাবে খুবই জাগতিক একটা পদ্ধতি। পৃথিবীর মানুষের জন্যই আল্লাহর শরিয়ত। সুতরাং, মানুষ এই শরিয়তের বিধানে থেকে দুনিয়াবি সেন্সে যেন রিওয়ার্ডেড হয়—এই ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনীতিতে সাফল্যই মূল কথা। আপনি বিজয়ী হলে মানুষ আপনাকে মেনে নেবে। কিন্তু অনেক বিশুদ্ধ আকিদাহ নিয়েও যদি আপনি পরাজিত থাকেন—সেক্ষেত্রে মানুষ আপনার পথ ও পদ্ধতি গ্রহণ করবে না৷
আপনার রাজনৈতিক দর্শন মানুষকে তার জাগতিক সমস্যার সল্যুশন দেয় কিনা—ব্যাপারটা যাচাই করে দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ। জানি, কথাগুলো অনেক বস্তুবাদী মনে হচ্ছে, কিন্তু কথাগুলোর মেরিট যদি উপলব্ধি করতে পারেন—আপনি একটি সফল ম্যারিটোক্রেটিক সিস্টেম ডেভেলপ করতে পারবেন, আর মানুষও সেটা মেনে নেবে।